শাহেদ মিজান, সিবিএন:
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেছেন, ইসলামে জঙ্গীবাদের কোনো ধরণের স্থান নেই। ইসলাম নয়; সন্ত্রাসবাদের আরেকটি নাম হলো জঙ্গীবাদ। যারা ধর্মের নামে মানুষ খুন করছে তারা আধুনিক সন্ত্রাসবাদী। ওই সন্ত্রাসবাদিদের থেকে তরুণ প্রজন্ম দূরে থাকবে। কারণ ইসলামে জঙ্গীবাদ নেই, আছে শান্তির বারতা।
রোববার সকাল ১১টায় কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ‘ইসলাম, জিহাদ ও জঙ্গীবাদ: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক জঙ্গীবাদ বিরোধী এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এক কথা বলেন।
প্রফেসর আবদুল মান্নান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দেশটা তোমাদের হাতে তোলে দিলাম। তোমাদেরকেই দেশকে রক্ষা করতে হবে। কিন্তু বিপদগামীদের পাল্লায় পড়ে তোমরা ধ্বংস হয়ো না। যদি তা হও তাহলে দেশটা ধ্বংস হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন কক্সবাজারের টগবগে যুবক শহীদ আবদুল হামিদ। শহীদ আবদুল হামিদের জন্মভূমি কক্সবাজারে কেন জঙ্গীবাদ হবে? তা হতে পারে না। তোমরা যারা তরুণ প্রজন্ম তোমরা তা হতে দেবে না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য্য ড. শিরীণ আকতার বলেন, ‘অশিক্ষা, ধর্মান্ধতা ও অপশিক্ষার কারণে জঙ্গীবাদ মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। তাই ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হবে। অন্যদিকে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও বেকারত্ব থেকেই জঙ্গীবাদে জড়ানো আশঙ্কা রয়েছে। তাই পবিত্র কোরআনকে অর্থসহ পড়ে সঠিক ব্যাখ্যা জানতে হবে। তবেই জঙ্গীবাদ থাবা দিতে পারবে না। একই সাথে পারিবারিক অনুশাসন মেনে চলতে হবে। মা-বাবাকে সন্তানদের খোঁজ রাখতে হবে। সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে এবং কী করছে- তার খোঁজ রাখতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘যে বাংলাদেশ এক সময় তলাবিহীন ঝুড়ি ছিলো সেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নে বিশ্বের মডেলে পরিণত হয়েছে। তাই পরাশক্তিগুলো এই দেশের উপর কুনজর দিয়েছে। তারা এই দেশের সম্পাদকে লুটে খাওয়ার জন্য চক্রান্তে নেমেছে। এই চক্রান্তের একটি বড় অংশ হচ্ছে জঙ্গীবাদ। তারা কৌশলে জঙ্গীবাদকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়ে নিজেরা ফায়দা লোটার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই আমাদেরকে সতর্ক থাকবে হবে।
তিনি আরো বলেন, জঙ্গীবাদ মানে জিহাদ নয়। এটা সম্পূর্ণ কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা। তারা মানুষকে বোকা বানানোর জন্য ইসলাম ও জিহাদের দোহাই দিয়ে নিরীহ মানুষ খুন করে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তাই তরুণ প্রজন্মকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। নিজের ভেতর থাকা অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে শুভ শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে হবে’
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য্য ড. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) গোলাম রুহুল কুদ্দুস, ইউনির্ভাসিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দীন আহামদ সিআইপি, সেক্রেটারি লায়ন মুজিবুর রহমান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি সদস্য মাহবুবা শিউলি, পরিচালক (অর্থ) আব্দুস সবুর, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুল হামিদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ.এস.এম সাইফুর রহমান, রেজিস্ট্রার নাজিম উদ্দীন সিদ্দিকী প্রমুখ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন শিক্ষিকা সাইদা তালুকদার রাহি। সেমিনারে ইউনির্ভাসিটির সকল শিক্ষার্থী অংশ নেন।